আগামী কাল এই বছরের সরস্বতী পূজা। পুরনো ডায়েরি ওল্টাতে ওল্টাতে এক জায়গায় হাত থেমে গেল।
২০০৩ এ সরস্বতী পুজো পরেছিল ৬ই ফেব্রুয়ারী। ২০০২ এ ২৬শে এপ্রিল আমার বড় মেয়ে পিউয়ের বিয়ে
হয়ে ছিল। ২০০৩ এর সরস্বতী পুজোতে সেই প্রথম ও আমাদের কাছ থেকে দূরে ,দিল্লীতে। তখন মোবাইল ফোন
তো দুরের কথা। এস.টি.ডি ফোন এর ঝামেলা ছিল খুব..সারাদিন চেষ্টা করেও ফোন করতে পারিনি ওকে.
শুয়েশুয়ে কেঁদেছি আর ভেবেছি ও কি করছে। অবশেষে সন্ধ্যে বেলায় কথা বলা হয়ে ছিল। সেই দিনের অনুভুতিআমার কলমে ধরা ছিল। আজ মেয়ে আমার ঘোর সংসারী ,এক পুত্রের সুখী জননী। কিন্তূ ও আজ ও আমার
সেই ছোট্ট পিউ। তুলে ধরছি আমার সেদিনের অনুভুতি। সরস্বতী পুজোর কথা।
.............. ১৬ই ফেব্রুয়ারী ২০০৩।.................
..............................
আজ সরস্বতী পুজো।
পাঁচ ,সাত ,দশ ,বারো / আঠারো ,কুড়ির ভিড়ে।
খুঁজে বেড়াই কোথায় আমার মুক্ত,মানিক হীরে।
ঝলমলে সাজ ,শ্যাম্পু চুলে /গয়না ভরা দেহ,
আধখোলা শাড়ি হাতে ধরেই ,পথটি চলে কেহ।
চলায় ,বলায় কত গরিমা /যেন কত বড় সেই মেয়ে ,
সারাদিন মা বসেই কাটান ,পথের পানে চেয়ে।
কাপড়ের এক পুঁটুলি হয়ে ,আসবে যখন মানিক।
ঠাকুর দেখার পরিশ্রমে ,বায়না হবে খানিক।
আজকের এই স্বাধীনতা ,কাপড় পরা টুকু।
আগলে রাখতে চায় সকলেই, সব মায়েদের খুকু।
এ কাপড় নয় ,ও কাপড় চাই ,কান্না সকাল থেকে ,
সন্ধ্যে হলেই শুতে যাওয়া সেই কাপড় মাথায় রেখে।
এমনি করেই ছোট্ট খুকুরা কখন বড় হয় ,কখন তার কান্না থামে কখন কাটে ভয়।
কখন শিশু কিশোরী হয়ে উছলা যুবতীহয় ,............একদিন দেখি নববধু হয়ে ,
পরগৃহে চলে যায়.. .
চিরাচরিত রীতি ,
মনে জমা শুধু স্মৃতি।
একদিন সেই ছোট্ট বেলায় আমার পান্না হীরে ,
দু দিক থেকে দুজনে মিলে ধরল আমায় ঘিরে।
ওই শাড়ি টা পড়ব আমি ,বোন্ পড়বে ওটা।
'শাড়ি দুটো সন্ধ্যে হলে ফিরবে তো রে গোটা ?????????????????'
শায়া কোথায় ,ব্লাউজ কোথায় ,হবে কি মাপসই ?
স্কার্ট ব্লাউজ আর কোমরে দড়ি ;;;তাই ই সই।
কাপড় পরার প্রহসন চলে ঘন্টা খানেক ধরে ,
গুটি গুটি চলে যায় দুটি তাদের স্কুলের ঘরে।
অঞ্জলি শেষে ,ঝাঁপিয়ে কোলে আসে।
কি হয়েছে মা রে ;?
মানবোধ আর কান্নায় ভরা ফর্সা মুখ লাল
টুকটুকে ঠোঁটে অভিমান ভরা ,ফুলে ফুলে ওঠে গাল।
...............................মাঝ রাস্তায় শাড়ি টা যে গ্যাছে খুলে,
হাতে কাপড় ,কোমরে দড়ি ,,,,,ছুট্টে এসেছি চলে।
.........................................ক্রিং ক্রিং ক্রিং ,রিং ওঠে আজ ,
রাত আটটার পরে।
সুদূর থেকে কান্না ভাসে সেই মেয়ের ই স্বরে।
মা গো ,তোমরা কেমন আছ ?করছ কি আজ সব ?
মায়ের কান্না বুকের তলে যায়না শোনা রব।
কেমন আছিস পিউ ?[খুকু ]?
তোকে ছাড়া যে ভালো লাগেনা। মন মানেনা এত টুকু।
সারা দুপুর তুই একলা ছিলিস ?হয়নি ঠাকুর দেখা ?
মা রে ,আমিও তো তোর্ মতই ছিলেম একাএকা।
সারাদুপুর ভেবেছি আমি ,তুই থাকতিস যদি,
ঝরনা হয়ে ছুটে বেড়াতিস ,স্রোতস্বিনী নদী। [আমার মেয়ের নাম বিয়াস ]
বাবা এনেছে খাবার কত স্কুল থেকে নিয়ে ,
চোখের জলে ভাসছে ভেবে কত দূরে আছে মেয়ে।
বোনের নেই ঝগড়া করার সাথী।
বলবে কাকে মুটকি কিম্বা হাতী।
একাএকা খাওয়া দাওয়ার আছে কি কোনো সুখ ?
ছোট বোনটির তোকে ছেড়ে ফুলে ফুলে ওঠে বুক।
আজ রাখি ফোন ,সোনা মেয়ে কাঁদিসনে ,তুই আর।
বাবা,বোন ,কাকু,কাকিমা ,দাঁড়িয়ে সারেসার।
কথা বল তুই ওদের সাথে ---আমরা ভালো আছি।
পরের পুজোয় দেখিস সবাই থাকব কাছাকাছি। . সরস্বতী পূজো
--------------------------------------------------------
................................................................................................................................................................... .
jatobar e ei lekhata pari, visan kanna pay
ReplyDelete